পাহাড়ের সমস্যা সমাধানে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই দাবী পিসিজেসএসের

প্রকাশঃ ০৩ অক্টোবর, ২০২৪ ০৯:৩১:২৫ | আপডেটঃ ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৬:২২:৪২
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পাহাড়ে সমস্যার প্রকৃত রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষে ১৯৯৭ সালের সইকৃত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে চুক্তি বাস্তবায়নের মধ্যেই পার্বত্য সমস্যার সমাধানের সূত্র নিহিত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(পিসিজেএসএস)। পাশাপাশি সংগঠনটি গত ১৯ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা ও রাঙামাটিতে সংঘটিত সা¤প্রদায়িক হামলার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ তিন দফা সুপারিশ করেছে।  

বৃহস্পতিবার পিসিজেএসএসের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমার সই করা এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য    জানানো হয়েছে। 

প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের পর বিশেষ মহলের পৃষ্টপোষকতায় গত ১৯ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর সা¤প্রদায়িক হামলাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে ২১টি সা¤প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হয়েছে। এ ধরনের সা¤প্রদায়িক হামলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অমুসলিম অধ্যুষিত পার্বত্য চট্টগ্রামকে মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত করা এবং সে লক্ষ্যে জুম্মদের(পাহাড়ী) অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, ভূমি জবরদখল, জায়গা-জমি থেকে উচ্ছেদ  ও জুম্মদের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করা। এসব সংঘটিত হামলার ঘটনায় নিহত, আহত,ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা,সা¤প্রদায়িক হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানানো হয় প্রতিবেদনে। 

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, খাগড়াছড়িতে নিহত মোটর সাইকেল চোর মামুনের বিরুদ্ধে থানায় ১৭টি মামলার মধ্যে ১৪টি চুরির ও  ৩টি মাদক সংক্রান্ত মামলা। এছাড়া ১৯ সেপ্টেম্ব মৃত মামুনের স্ত্রী মুক্তা আক্তার  খাগড়াছড়ি সদর থানায় হত্যা মামলায় প্রধান আসামী শাকিল, রফিকুল আলম ও দিদারুল আলমের নাম উল্লেখ করেছেন। মামুনের মৃত্যুর পরপরই  বাঙালিরা সা¤প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য ও  অপপ্রচার চালিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরের মধুপুরে হামলার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে ১৯ সেপ্টেম্বর দীঘিনালা ও খাগড়াছড়ি এবং ২০ সেপ্টেম্বর রাঙামাটিতে বিশেষ মহলের সহযোগিতায় সা¤প্রদায়িক হামলা চালালে ৪ জন জুম্ম নিহত, শতাধিক আহত  ও  পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়সহ শতাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ও ঘরবাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

প্রতিবেদনে  বলা হয়, দীঘিনালা-খাগড়াছড়িতে জুম্মদের উপর সা¤প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে ২০ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি জেলা সদরে সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আদিবাসী জুম্ম ছাত্র-যুবকের মিছিলটি জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণ থেকে শুরু  হয়ে মিছিলটি বনরূপা পেট্রোল পাম্প এলাকায় পৌঁছলে প্রথমে বনরূপা বিলাস বিপনী নামক দোকানের পাশ থেকে এবং পরে দোকানের ছাদ থেকে একজন সেটেলার পাহাড়ি ছাত্রদের মিছিলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে মিছিলকারীরা উত্তেজিত হয়ে সেটেলার বাঙালিদের উদ্দেশ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে উভয়ের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়।

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, রাঙামাটিতে মিছিলে ইউপিডিএফের দুই শতাধিক ছাত্র যুবক অংশ গ্রহণ করেছিল। মিছিলটি জেলা শিক্ষা অফিসের সামনে পৌঁছলে অন্যান্য শ্লোগানের সাথে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন কর, করতে হবে শ্লোগানটি তুলে ধরলে অধিকাংশ ছাত্র বাস্তবায়ন কর, করতে হবে বললেও ইউপিডিএফের ওই ছাত্র-যুবকরা ভূয়া, ভূয়া বলে চিৎকার করে। দুইশত জন অপরিচিত ছাত্র-যুবক মিছিলে সামিল হওয়াদের সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকরা চিনতেন না।  বিবৃতিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) নাম জড়িয়ে আইএসপিআর এর বিবৃতির প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওই কর্মসূচিতে পিসিপি’র কোন সম্পৃক্ততা ছিল না বলে দাবী করা হয়েছে।