রামগড়ে দুই গৃহবধুকে ধর্ষণের অভিযোগ : জেলা বিএনপি’র নিন্দা ও প্রতিবাদ

প্রকাশঃ ২৭ অগাস্ট, ২০২৪ ০১:৫১:৩১ | আপডেটঃ ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০৬:১১

সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ির রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নের দুর্গম কালাপানি এলাকায় স্বামী রহমত আলীকে বেদম প্রহার করে হাত-পা বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণে বাধা দেয়ায় গৃহবধূর বৃদ্ধা শাশুড়িকে বেদম প্রহার করে দুর্বৃত্তরা। পরে ঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটে নিয়ে যায় তারা।


গত ২২ আগস্ট রাতে এই ঘটনা ঘটলে ভৌগলিক দুর্গমতা এবং বৈরি প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে তাঁরা রোববার বিকেলে রামগড় হাসপাতালে ভর্তি হতে পেরেছেন। এদিকে গত ২৩ আগস্ট উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের নং ওয়ার্ডের বাজারহাট পাড়ায় জনৈক পাহাড়ি গৃহবধূকে (৪৯) ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।


খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে রামগড়ে সংঘটিত দুটি ধর্ষণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।


আজ (সোমবার) খাগড়াছড়ি জেলাসদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রহমত আলী অভিযোগ করেন, হাসপাতালে যাওয়ার আগে স্ত্রীসহ তারা রামগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান। কিন্তু পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি।


জানা যায়, পাতাছড়া ইউনিয়নের নং ওয়ার্ডের কালাপানি গ্রামটি উপজেলার অত্যন্ত দুর্গম পাহাড়ি এলাকা।


গৃহবধু’র আহত স্বামী রহমত আলী জানান, রহমত আলী বলেন, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ১৮-২০ জন পাহাড়ি সন্ত্রাসী তাদের বাড়িতে হানা দেয়। তারা প্রথমে ঘর থেকে তাকে বাহিরে এনে হাত-পা মুখ বেঁধে বেদম মারপিট করে পরে তাকে বেঁধে রেখে জন সন্ত্রাসী ঘরে ঢুকে তার স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তার বৃদ্ধা নুরুচ্ছফা বেগম ধর্ষণে বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাকেও প্রহার করে।


রামগড় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদেরকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। রোববার সন্ধ্যায় তারা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

তিনি আরও জানান, ধর্ষণের পর সন্ত্রাসীরা তার মা স্ত্রীর শরীর থেকে স্বর্ণালংকার কেড়ে নেয়। তারা নগদ ৫২ হাজার টাকা, সোলার প্যানেলের দুটি ব্যাটারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটে নিয়ে ভোর ৪টার দিকে চলে যায়। চলে যাওয়ার সময় জায়গার দলিলপত্র তাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে দ্রুত অন্যত্র চলে যেতে হুমকী দিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের মধ্যে ছয়জনকে চিনলেও তিনজনের নাম পরিচয় জানেন তিনি।


দরিদ্র কৃষক রহমত আলী আরও অভিযোগ করে বলেন, বন্যার কারণে তারা গত দিন ঘর থেকে বের হতে পারেননি। রাস্তা থেকে পানি সরে গেলে রবিবার বেলা ১১টার দিকে তিনি তার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশিসহ রামগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান। কিন্তু পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি।


বিষয়ে রামগড় থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) দেব প্রিয় দাশ বলেন, ‘ওই গৃহবধূ তার স্বামীসহ থানায় এসেছিলেন। ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর কোন আলামত পাওয়া যায় না। তবুও নারী পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হয়েছে। কিন্তু ধর্ষণের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি।


খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি ‘র সহ-দপ্তর সম্পাদক নিপু আহমেদ এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেন, আমরা আশঙ্কা করছি দেশের পতিত স্বৈর শাসক শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে দেশে যে বিরাজমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এই সুযোগে পার্বত্য অঞ্চলে ইউপিডিএফ, জেএসএস পালিয়ে থাকা আওয়ামীলীগ এহেন ন্যাক্কার জনক কর্মকান্ড ঘটিয়ে পার্বত্য অঞ্চলে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করার পায়তারা চালাচ্ছে।


এমতাবস্থায় আওয়ামীলীগ আঞ্চলিক দলের -শস্ত্র সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করার জন্য আইন শৃংখলা, নিরাপত্তা বাহিনী জনগণকে সক্রিয়ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আহবান জানাচ্ছে জেলা বিএনপি।