সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে তারুণ্যের আশা-আকাক্সক্ষার কার্যকর প্রতিফলন চাই’ এই দাবীকে সামনে রেখে আজ ১২ আগষ্ট আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) খাগড়াছড়ির উদ্যোগে এক মানববন্ধন শাপলা চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত হয়।
সনাক সদস্য লালসা চাকমা এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধন কর্মসূচীতে খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
এতে বক্তারা বলেন, সকল রাজনৈতিক দলসহ সকল পক্ষকে এই ছাত্র-জনতার
আন্দোলন ও অভ্যুত্থান থেকে
শিক্ষা নিতে হবেÑতারুণ্যের শক্তিকে দমন নয়, বরং তাদের প্রাপ্য অধিকার, মৌলিক চাহিদা পূরণ এবং তরুণরা তাদের কাক্সিক্ষত স্বপ্ন পূরণে, দাবি আদায়ের আন্দোলনে যাতে নির্ভার থাকতে পারেÑরাষ্ট্রকে তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। একইসঙ্গে ‘‘স্বৈরাচার-পতন’’ উদ্যাপনের নামে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও প্রতিষ্ঠানে হামলা;
মন্দির ও উপসনালয়ধ্বংসসহ ধর্মীয়
সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে
আক্রমণ, গণমাধ্যম, পুলিশবাহিনী ও পেশাজীবিদের বিরুদ্ধে
প্রতিশোধপরায়ণ আচরণের মাধ্যমে তারুণ্যের এই অর্জন অঙ্কুরেই
বিনষ্ট হয়ে যেতে পারেÑএ জাতীয় আত্মঘাতী
গর্হিত অপরাধ প্রতিরোধে তরুণ সমাজ স্বপ্রণোদিত হয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
টিআইবি’র এরিয়া কোঅর্ডিনেটর
মোঃ আবদুর রহমানের সঞ্চালনায় ধারণা পত্র পাঠ করেন ইয়েস সহদলনেতা মোঃ হুমায়ন কবির ও ইয়েস সদস্য
জাহানারা আক্তার। সনাক এর সহ সভাপতি
বিশিষ্ট লেখক ও সাহিত্যিক অংসুই
মারমা শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। সনাক থেকে বক্তব্য রাখেন সনাক সদস্য ও সিনিয়র সাংবাদিক
মোঃ জহুরুল আলম, খাগড়াছড়ি সরকারি মহিলা কলেজের অর্থনীতির প্রভাষক মেহেরুন্নিছা মিলি, শরৎকান্তি চাকমা, সলিতা চাকমা প্রমূখ। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন এর সদর উপজেলা
সমন্বয়ক মাহফুজুর হোসেন সকাল, বিএনসিসির ক্যাডেট করবী, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক আল আমিন, সিনিয়র
রোভার মেট শ্রাবণ দে, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও অ্যাকটিভ সিটিজেন
গ্রুপ (এসিজি) ভূমি এর সদস্য মিলন
চাকমা, শিক্ষানুরাগী মোঃ মোক্তার মিয়া, ইয়ুথ এনগেজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট (ইয়েস) এর দলনেতা মোঃ
সোহাগ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশ্ব যখন তরুণদের ওপর নির্ভর করে একটি টেকসই উন্নত বিশে^ পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে, ঠিক সেই মুহূর্তে তারুণ্যের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে এক ইতিহাসের সাক্ষী
হয়েছে বাংলাদেশ। একটি শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক দাবির
আন্দোলনকে প্রথমে উপেক্ষা ও পরবর্তীতে অপ্রয়োজনীয়
ও নজিরবিহীন বলপ্রয়োগের মাধ্যমে রাষ্ট্রকাঠামোকে সংকটের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। নির্মম হত্যাকা-, নির্লজ্জ মিথ্যাচার, নিপীড়ন, নির্যাতন হামলা, মামলা, গণগ্রেফতার, মানবতাবিরোধী কর্মকা- থেকে শুরু করে জঘন্য সকল উপায় অবলম্বন করেও তারুণ্যকে বশ করতে পারেনি
স্বৈরাচার। বেসরকারি হিসাবে শিশু-কিশোর, সংবাদকর্মী ও অন্যান্যপেশাজীবীসহ প্রায় চার
শতাধিক শিক্ষার্থী-জনতা হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন।
নিপীড়ন ও নজিরবিহীন বলপ্রয়োগের
বিরুদ্ধে তারুণ্যের নেতৃত্বে জনজোয়ারে ভেসে গিয়েছে স্বৈরাচারী সরকার, পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, যে নতুন দিনের
শুভসূচনা হয়েছে, এর মধ্য দিয়ে
মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার আলোকে রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে এদেশের সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা
নিশ্চয়তাসহ একটি বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক সুশাসিত স্বদেশ বিনির্মাণে দুর্জয় তারুণ্য অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করবেÑবাংলাদেশের আপামর জনগণ সেই আস্থা ও বিশ^াসের
জায়গা থেকে তাদের সারথি হয়েছে।