সিএইচটি টুডে ডট কম, কাউখালী (রাঙামাটি)। ঘুমন্ত বউ শাশুরীকে ধারালো লোহাড় শাবল দিয়ে খুচিঁয়ে, আঘাত করে হত্যা করেছে বিল্লাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কাউখালী উপজেলার কাশখালী গ্রামে হত্যাকান্ডের এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে কাউখালী থানা পুলিশ। এঘটনায় আটক করা হয়েছে ঘাতক বিল্লালকে।
নিহতরা হলেন এক সন্তানের জননী ফাতেমা আক্তার (২৬) ও তার বৃদ্ধ মা আয়েশা খাতুন (৬১)। ঘাতক বেলাল নিহত ফাতেমার স্বামী।
নিহতের প্রতিবেশি রোকেয়া বেগম ও কাউখালী থানা পুলিশ সূত্রে জানাযায়- কাশখালী এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের মেয়ে ফাতেমা বেগম (২৬) আক্তারের সাথে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাইরা গ্রামের আনজু মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেন (৩৫) এর সাথে তিন বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে ঘাতক স্বামী বিল্লাল স্ত্রী ফাতেমাকে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। তাদের সংসারে ২ বছরের একটি শিশু সন্তানও রয়েছে। স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে মাস দুই/এক আগে কাশখালীর মায়ের বাড়ীতে চলে আসে ফাতেমা। ২৯ জুলাই স্ত্রীকে ফিড়িতে নিতে কাউখালী আসে বেলাল। নিহত স্ত্রী ফাতেমা যেতে রাজি না হওয়ায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে কাউখালী বাজারে কাজী অফিসে বিবাহ বিচ্ছেদ রেজিস্ট্রেশন এর মাধ্য ছাড়াছাড়ি হয় ফাতেমা বেল্লালের। ছাড়াছড়ি হলেও ক্ষোভ নিয়েই কুমিল্লা ফিড়ে যায় বেলাল।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বিল্লাল ফাতেমার আড়াই বছর বয়সী শিশু ছেলে পার্শবতী বাড়িতে বাবা কই বাবা কই ডাকাডাকি করলে ঘটনা সন্দেহ হলে দোকানে থাকা পুরুষদের খবর দেয় পার্শবর্তী ঘরের মহিলারা। স্থানীয়রা এসে ঘরে মৃত অবস্থায় ফাতেমা ও আয়েশাকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। রোকেয়া বেগম জানান- খুব বেশি বৃষ্টি হওয়ায় এবং ঘরটি একটু দুরে থাকায় চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পাইনি। তবে শিশুটির কান্না একবার শুনেছিলাম একটু পরেই শিশুটি আমার ঘরে চলে আসে। ঘটনার সাথে বিল্লাল জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দের করেন স্থানীয়রা।
এদিকে ঘাতক বেলাল হত্যাকন্ড ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় কাউখালী রাণীরহাট সড়কের বেতছড়ির পাইন বাগান এলাকায় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তাকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখাযায়- নিহত ফাতেমা ও আয়েশা পাহাড়ের ঢালুতে একটি ঝরাজীর্ণ ঘরে ঘাতক বিল্লাল প্রবেশ করার জন্য ঘরের পিছনে সিধ কাটে (মাটি খুড়ে)। এটি দিয়ে ঘরে ঢুকেই হত্যাকান্ড ঘটায় বেলাল।
কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ রাজীব চন্দ্র কর জানান- কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম পিপিএম, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকান্ডে ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকন্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বিল্লাল। এব্যাপারে নিহতের ভাই বাদী হয়ে কাউখালী থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।