খাগড়াছড়িতে ৪ ইউপিডিএফ সদস্য নিহতের ১৮ ঘন্টা পর মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশঃ ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০৭:৫৩:১৫ | আপডেটঃ ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ০৭:২৯:২০
সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ির পানছড়িতে প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট’র (ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রæপের) ৪ সদস্য নিহত ও ৩ জনকে অপহরণের অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। মঙ্গলবার সকালে ইউপিডিএফ সংগঠক অংগ্য মারমা এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার পানছড়ির পূজগাং এলাকায় যুব সমাবেশে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ইউপিডিএফ সমর্থিত গণতান্ত্রিক যুবফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা গত সোমবার স্থানীয় অতুল চাকমার বাড়িতে অবস্থান করেন। রাত ১০ টার দিকে ওই বাড়ির চারপাশ থেকে অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে এবং ঘরের ভেতর ঢুকে গণতান্ত্রিক যুবফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুনীল ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়ি শাখার সহ-সভাপতি লিটন চাকমা ও ইউপিডিএফ সংগঠক রহিন বিকাশ ত্রিপুরাকে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় শুকনাছড়ির সাবেক সিও নীতি দত্ত চাকমা, দুদকছড়ার সেকশন কমান্ডার হরি কমল ত্রিপুরা ও ইউপিডিএফ সদস্য মিলন চাকমাকে ধরে নিয়ে যায়।
   
হামলার জন্য ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রæপের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের মুখপাত্র নিরন চাকমার প্রেরিত এক বিবৃতে এ ঘটনার জন্য ২০১৭ সালে সৃষ্ট পাহাড়ের অপর আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিককে দায়ী করা হয়েছে।
 
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্যামল কান্তি চাকমা জানান, অন্তঃকোন্দলে এ সংঘাত। ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক এ হত্যাকাÐের সাথে জড়িত নয়।

পানছড়ির লোগাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয় কুমার চাকমা জানান, গতরাতে গুলির শব্দে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ও বিজিবিকে সকালে ফোন করে জানানো হলেও ১৮ ঘন্টা পর পুলিশ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে পানছড়ি থানায় নিয়ে যায়।

পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. শফিউল আজম জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। মরদেহ গুলো থানায় রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ গুলো স্বজনদের হস্তান্তর করা হবে।
 
বাজার বর্জন ও অবরোধের ডাক ইউপিডিএফ’রঃ
খাগড়াছড়িতে ৪ নেতাকর্মীকে খুন ও ৩ জনকে অপহরণের প্রতিবাদে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইউপিডিএফ। গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আগামী ১৩, ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর প্রতিবাদ সমাবেশ ও শোক সভা পালন এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। ১৭ ডিসেম্বর পানছড়ি উপজেলায় সাধারণ ধর্মঘট, ১৮ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি জেলায় সকাল সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে। এ ছাড়া আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারী পর্যন্ত মাসব্যাপী পানছড়ি বাজার বয়কটের ডাক দিয়েছে ইউপিডিএফ।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক নামের সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। এরপর থেকে থেমে থেমে পাহাড়ে একাধিক সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে ২০১৮ সালে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রæপ পানছড়ি বাজার বয়কট করে। এ সময় অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাজারের ব্যবসায়ীরা।