প্রকাশঃ ১৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০৩:০৩:৪৩
| আপডেটঃ ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০১:৪০:৪৯
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পার্বত্য চট্টগ্রামের চারণ সাংবাদিক, দৈনিক গিরিদর্পণ ও সাপ্তাহিক বনভূমি সম্পাদক বহু সাংবাদিক গড়ার কারিগর ও সাংবাদিকতার বাতিঘর হিসেবে যার নাম চলে আসে তিনি হলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সাংবাদিকতা পেশায় বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত আলহাজ্ব এ কে এম মকছুদ আহমেদ। জন্ম চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই। শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতায় আলো ছড়িয়ে দেন পার্বত্য জেলায়।
সোমবার (১৫ নভেম্বর) সকালে 'দৈনিক গিরিদর্পণ' জেল রোডস্থ অফিসে সাংবাদিকতা পেশায় ৫৪ বসন্ত পেরিয়ে ৫৫ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষ্যে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার আল হক, প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের প্রতিনিধি পুলক চক্রবর্তী, রাঙামাটি সাংবাদিক ফোরাম সংগঠনের পক্ষ থেকে সভাপতি নন্দন দেবনাথ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিশির দাশ বাবলা, কোষাধ্যক্ষ লিটন শীল, জিটিভি রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি মিল্টন বাহাদুর, চ্যানেল আই রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি মনসুর আহমেদ, আরটিভি রাঙামাটি প্রতিনিধি ইয়াছিন রানা সোহেল, প্রেস ক্লাবের সদস্য দীপ্ত হান্নান, এশিয়ান টিভি রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি আলমগীর মানিক, রাখাইন জনকল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে সভাপতি ও ৭১টি প্রতিনিধি উচিংছা রাখাইন কায়েস, রাঙামাটি প্রতিবন্ধী স্কুল ও পুনর্বাসনকেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছার, আইডিয়াল ওয়েলফেয়ার সেন্টারের পক্ষ থেকে সভাপতি মুফতি শামসুল আলম ও পরিচালক মাহমুদুল হাসান সোহাগসহ অগণিত সংবাদকমীগণ।
এসময় ফুলেল শুভেচ্ছা দিতে এসে অতিথিরা বলেন, এ কে এম মকছুদ আহমেদ পার্বত্য এলাকায় অশান্তির দাবানল থেকে মুক্ত করতে সেই সময় সাহসিকতার মাধ্যমে সাংবাদিকতা করে গেছেন পাহাড়ে। তার লেখনির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমস্যা, সম্ভাবনা, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পাহাড়ের মানুষের কথা দেশ বিদেশের পত্র পত্রিকায় তুলে ধরেছেন। দীর্ঘ এই পথ চলায় তিনি সত্য সংবাদ প্রকাশ হতে কখনো নিজেকে বিরত রাখেন নাই। তাই তিনি এই পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতার বাতিঘর। তাঁর আদর্শ নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িতে দিতে পারলে সাংবাদিকতার পেশা আরও সুদৃঢ় হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের চারণ সাংবাদিক, দৈনিক গিরিদর্পণ ও সাপ্তাহিক বনভূমি সম্পাদক ১৯৬৯ সালের ১৫ই নভেম্বর' দৈনিক আজাদী'র রাঙামাটি সংবাদদাতা হিসেবে সাংবাদিকতা জীবন শুরু হয়। তারপর শুরু হয় দীর্ঘ পথচলা। ১৯৭৩ সালে তিনি যোগ দেন দৈনিক জনপদে। পরবর্তী বছর (১৯৭৪) সালে 'দৈনিক পূর্বদেশ 'পত্রিকায় রাঙামাটি জেলা সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। এরপর যুক্ত হন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা ও এনায়। ১৯৭৬ সালে তিনি 'জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাক' পত্রিকায় রাঙামাটি জেলা সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন এবং এখনও পর্যন্ত তার সাথে যুক্ত রয়েছেন। এছাড়াও 'নিউ নেশান' 'ডেইলি ইন্ডিপেন্ডেন্ট' পত্রিকায় রাঙামাটি সংবাদদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশীয় সংবাদ জগতের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও প্রসারিত হয়েছেন। তিনি বিবিসি, দি টেলিগ্রাম, সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭৮ সালে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত স্বাধীনতা উত্তর সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সর্বপ্রথম ও একমাত্র মুখপত্র "সাপ্তাহিক বনভূমি"।
তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৮১-৮৩ থেকে দৈনিক গিরিদর্পন পত্রিকার প্রকাশনা শুরু করে। 'দৈনিক গিরিদর্পন' পত্রিকাটি পার্বত্য জেলার প্রাত্যহিক ঘটনার বিশ্লেষণ, অনুসন্ধানী, পর্যবেক্ষণ ও ধারাবাহিক উপস্থাপনার মাধ্যমে এ অঞ্চলের মানুষের বিশ্বাস ও ভাবনার অসংকোচ প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে এখনও স্বকীয় অস্তিত্বের প্রকাশ ঘটিয়ে চলছে। মফঃস্বল এলাকা থেকে প্রকাশিত কোন দৈনিকের নিরবিচ্ছিন্ন প্রকাশনার এত দীর্ঘ ইতিহাস বিরল।
'সাপ্তাহিক বনভূমি 'ও' দৈনিক গিরিদর্পণ' পার্বত্যঞ্চলে সংবাদপত্রের পাঠক ও সংবাদকর্মী সৃষ্টিতেও রেখেছে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। তিন পার্বত্য জেলায় বর্তমানে কর্মরত স্বনামধন্য সংবাদকর্মীদের প্রায় সকলেই প্রাথমিক পর্যায়ে এ দুটি পত্রিকার সাথে কোন না কোনভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। এদিক থেকে বলা যায় একেএম মকছুদ আহমেদ পার্বত্যঞ্চলের সংবাদকর্মী গড়ার নিপুণ কারিগর। সাংবাদিকতা জীবনে ২০২১ সালে বসুন্ধরা অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্টান থেকে পেয়েছেন অসংখ্য পুরষ্কার ও সম্মাননা।