অবশেষে কাল মঙ্গলবার উদ্বোধন হতে যাচ্ছে রামগড় ইমিগ্রেশন

প্রকাশঃ ১৪ নভেম্বর, ২০২৩ ০৭:৫২:৪৫ | আপডেটঃ ০৮ অক্টোবর, ২০২৪ ০৭:৪৪:৩৫

সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে ইন্টারন্যাশনাল প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, রামগড় নামেই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে রামগড় ইমিগ্রেশন। রামগড় স্থলবন্দর ইনচার্জ আফতাব উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, শুরু থেকে রামগড় ইমিগ্রেশন নামে এর নামকরণ করা হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্টারন্যাশনাল প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, রামগড় নামেই মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রামগড় স্থলবন্দরের এই ইমিগ্রেশন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালুর লক্ষে টার্মিনাল সংক্রান্ত সবধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে

 

ভারতের সেভেন সিস্টার্সখ্যাত উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য অরুণাচল, আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ত্রিপুরার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে রামগড় ত্রিপুরার সাব্রুম স্থলবন্দর চালুর উদ্যোগ নেয় এই দুই দেশ। তারই অংশ হিসেবে সরকার ২০১০ সালে রামগড়কে স্থলবন্দর ঘোষণা দেয়। ঐতিহাসিক মহকুমা শহর রামগড়ের ফেনী নদীর ওপর নির্মিত বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু- কে কেন্দ্র করে এখানেই গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের ১৫তম পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম স্থলবন্দর রামগড়। এরইমধ্যে রামগড়-বারৈয়ারহাট সড়কের বেশ কয়েকটি দুলেন বিশিষ্ট ব্রিজ নির্মাণও শেষের পথে। স্থলবন্দরকে ঘিরে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০২০ সালের ১৮ আগস্ট  জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় খাগড়াছড়ির রামগড় থেকে হেয়াকো-বারৈয়াইয়ারহাট সড়কের জন্য ৮৪৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পসহ সাতটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। ২০২১ সালের মার্চে রামগড় স্থলবন্দর চালুর লক্ষে ফেনী নদীর উপর নির্মিত ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু- এর উদ্বোধন করা হয়

 

ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শুরু হলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশের মানুষ চিকিৎসা বা ভ্রমণের জন্য রামগড় সাব্রুম সীমান্ত পথে সহজে ভারত ভ্রমণে যেতে পারবেন। একইভাবে ভারতের ত্রিপুরাসহ আশেপাশের রাজ্যের মানুষও সীমান্ত পথে বাংলদেশ ভ্রমণে আসতে পারবেন। দক্ষিণ ত্রিপুরার মহকুমা শহর সাব্রুম থেকে ইতিমধ্যে আগরতলা পর্যন্ত মহাসড়কের উন্নয়ন রেল সার্ভিস চালু করা হয়েছে বলে জানা যায়

 

ইমিগ্রেশন কার্যক্রমে চালু হবার খবরে পাহাড়ের মানুষদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। সাংস্কৃতিক ভাব বিনিময় ছাড়াও অঞ্চলে বসবাসরত বহু ভাষাভাষী মানুষের অনেক স্বজন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন দুই দেশে। ইমিগ্রেশন চালু হলে সে বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে বলছেন তারা। পাশাপাশি পর্যটন খাতেরও বিকাশ ঘটবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের

 

রামগড় স্থলবন্দর প্রকল্প পরিচালক সারোয়ার আলম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামগড় স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম উদ্বোধনের বিষয়ে নিশ্চিত করে বলেন, ইতোমধ্যে রামগড় স্থলবন্দর দিয়ে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালুর লক্ষ্যে টার্মিনাল শেড, ব্যাংক, কাস্টমস, বিজিবি পুলিশের সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে

 

রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতা আফরিন, পৌর মেয়র রফিকুল আলম কামাল, উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, পর্যটকসহ সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন, রামগড় স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চালু হলে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ পযর্টন শিল্প দ্রুত প্রসার লাভ করবে এবং উভয় দেশই লাভবান হবে

 

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের জানুয়ারিতে দিল্লি সফরকালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে বৈঠকে রামগড়-সাব্রুম স্থলবন্দর চালুর যৌথ সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশ-ভারত দু-দেশের মধ্যে ট্রানজিট সুবিধা, যাতায়াত ব্যবস্থা সহজতর করা এবং আমদানি-রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৫ সালের জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু- নামে ফেনী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির ভিত্তি প্রস্তর ফলক উন্মোচন করেন। ২০১৭ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়