গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা না হলে মানুষও আওয়ামী লীগকে নিষেধাজ্ঞা দিবে : বরকত উল্লাহ বুলু

প্রকাশঃ ২৭ মে, ২০২৩ ০৭:৩৭:৩৯ | আপডেটঃ ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৮:৫৩:৪৩
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য এবং একই সঙ্গে ভোট কারচুপি ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতাকে সহিংসভাবে দমনের যেকোনো নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকার যে অবস্থান নিয়েছে, তা বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে ভিসা নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে, সেখানে নির্বাচন সুষ্ঠু করার কথা বলা হয়েছে। তার মানে হলো, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা, বাকস্বাধীনতা কোনোটিই অর্জন সম্ভব নয়। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা না হলে দেশের মানুষও আওয়ামীলীগকে নিষেধাজ্ঞা দিবে।

শুক্রবার (২৬ মে) বিকালে বান্দরবান জেলার আউটার ষ্টেডিয়াম মাঠে বিএনপির ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে জন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু এসব কথা বলেন।

বান্দরবান জেলা বিএনপির সভাপতি মিসেস মা ম্যা চিং এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজার পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা শামীমা বরকত লাকী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া।

এসময় বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, গুম, খুন, মিথ্যাচার, মিথ্যা মামলা ও গায়েবি মামলার রাজনীতির মাধ্যমে ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে আবারো ক্ষমতায় যাওয়ার আকাঙ্খা এখনো অব্যাহত রেখে আওয়ামীলীগ বড় ভুল করছে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ভাবে পরাজিত হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তারা সরকারি কর্মকর্তা ও তাদের দলীয়করণকৃত কিছু প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে আজকে রাষ্ট্র চালাচ্ছে। জনগণের ভোট চুরি করে জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখল করছে, সেই জায়গায় চলে গেছে আওয়ামী লীগের নির্ভরশীলতা।
আওয়ামী লীগ দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলেছে উল্লেখ বরকত উল্লাহ বুলু আরো বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে তারা গণতন্ত্রের লেবাসে কর্তৃত্ববাদী সরকার চালিয়েছে। বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনই ছিল প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন। কিন্তু আগামীতে এই অবস্থার শেষ হতে বাধ্য।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, সারা বিশ্ব আজকে বাংলাদেশে নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য অংশীদারীমূলক নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সব বিশ্ববিবেক আজকে বাংলাদেশের মানুষের পাশে আছে। যত গণতন্ত্রকামী দেশ আছে, সবাই বাংলাদেশের নির্বাচন মানবাধিকার, আইনের শাসন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। কারণ বাংলাদেশে অনির্বাচিত সরকার দেশ চালাচ্ছে। গণতন্ত্রহীন বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই বলেই তারা নজরদারি করছে। আজকে বাংলাদেশকে তারা যে জায়গায় নামিয়ে নিয়ে এসেছে, এর চেয়ে দু:খের বিষয় আর কিছুই হতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। তারা জনগণের ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় বসে আছে। বিগত ৩টি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ চোরাপথে জিতেছিল, কিন্তু আগামীতে বাংলাদেশে আর কোন প্রহসনের নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তাই, নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনেই আগামী নির্বাচন হতে হবে। ভোট ডাকাতির নির্বাচন আর বাংলাদেশে হতে দেওয়া হবে না।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন তুষার, জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি  লুসাই মং, জেলা বিএনপি নেতা আবিদুর রহমান, রিটল বিশ্বাস, সদর পৌর বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সভপতি ছরোয়ার জামাল, সাধারণ সম্পাদক চনু মং, রোয়াংছড়ি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাও সেতুং, রুমা উপজেলা বিএনপির সভাপতি জিংসমলিয়ান বম, সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস মিয়া, জেলা যুবদলের সভাপতি জহির উদ্দিন মাসুম, জাসাস সভাপতি এ্যাড. মো. আলমগীর, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. উম্যাচিং, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফ ইসলাম চৌধুরীসহ প্রমূখ।