সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। জাতীয় সংসদ সদস্য ও জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা ঊষাতন তালুকদার এমপি বলেছেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ হোক এটা আমরা চাই। আমরা যেহেতু জনসংহতি সমিতি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। সেহেতু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নির্বাচন গণতন্ত্রের একটি অংশ। আগামী নির্বাচন যথাযথ সময়ে সুন্দর, সুষ্ঠভাবে হোক এটা আমরা চাই।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাথে আমাদের কোন বিরোধ নাই, বরং জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর বিশ্বাস ও আস্থার কারণে আমরা ১৯৯৭ সনের ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি, ২১ বছরেও চুক্তি বাস্তবায়ন না হলেও আমাদের বিশ্বাস আগামীতে সরকার চুক্তি পুনাঙ্গ বাস্তবায়নের উদ্যেগ নিবেন।
তিনি আরো বলেন, কেউ কেউ রাঙামাটিতে থেকে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগে ভুল তথ্যে পাঠিয়ে জনসংহতি সমিতির সঙ্গে দুরত্ব সৃষ্টি করতে চাইলেও সেটি না পেরে স্থানীয়ভাবে নানা প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।
রাঙামাটিতে তার কার্যালয়ে একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচনে আঞ্চলিক দল বাধা দিচ্ছে প্রতিপক্ষের এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, একটি দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নানা রকমভাবে আনা যায়। সেটি কতটুকু সত্যি, তার বাস্তবতা কতটুকু? কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করার আগে কোন দায়িত্বশীল নেতার চিন্তা ভাবনা করে অভিযোগ উপস্থাপন করা উচিত। কিছুদিন আগে আমি ইউটিউবে দেখলাম আমি নাকি কোথায় বলেছি, উন্নয়ন করতে পারেনি। আমিতো বলি নাই উন্নয়ন করতে পারবো না। আমি যদি উন্নয়ন করতে না পারি তাহলে জনগন কেন আমাকে ভোট দিলো। নির্বাচিত করলো কেন। আমি যদি উন্নয়ন করতে না পারি তাহলে আমি নির্বাচন করতে যাবো কেন? জনগণের সেবা করার জন্য আমি নির্বাচন করেছি। চুক্তি যাতে বাস্তবায়ন হয় সেই চেষ্টা করার জন্য, রাখার জন্য, আমি আমি নির্বাচন করেছি এবং জনগণ আমাকে ভোট দিয়েছে। আমি উন্নয়ন করতে পারবো না এই ধরনের কোন কথা আমি বলিনি।
তিনি আরো বলেন, আজকে অভিযোগ করা হচ্ছে অস্ত্রবাজি করা হয়েছে। তাহলে সরকার কি এতই দুর্বল? অস্ত্র বাজি করতে দিবে সরকার। উনিতো মুখোমুখি হয়েছেন, উনিতো কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। উনাকে কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন করেছে আমি শুনেছি ওরা অস্ত্র দেখিয়েছে আপনার অস্ত্রগুলো কোথায়? আমিতো মনে করি এটা প্রশাসনের বিরুদ্ধে কথা বার্তা বলতেছে। প্রশাসন কি বলতেছে. জেলা আইন শৃঙ্খলা মিটিং এ কি বলা হয়? এখানে তো অস্ত্রের কথা বলা হয় না। তাহলে আমি মনে করি যে, কিছু দিন আগে উত্তর বঙ্গে বস্তা ভর্তি অস্ত্র পাওয়া গেলো। তাহলে কি ওখানে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ অস্ত্র রেখেছে। পার্বত্য অঞ্চলে বাহিরে কি চাঁদাবাজি হয় না? তাহলে শুধু কেন পার্বত্য অঞ্চলে চাদাবাজির বিষয়টা আসবে। আজকে সমগ্র বাংলাদেশে এই বিষয়টি আসুক যাতে অবৈধ অস্ত্র না থাকে। আমরা তো অস্ত্র বাজির পক্ষে নয়। আমরা চাই এখানে স্থাযীভাবে শান্তি আসুক, মানুষ নিরিবিলি বসবাস করুক। স্বাভাবিক ভাবে থাকুব, মানুষের জীবন মান উন্নয়ন হোক। আমরা উন্নয়নের বিপক্ষে নয়। সেক্ষেত্রে আমাদেরকে যদি অহেতুক অভিযোগ উত্থাপন করা হয় এটা অযৌক্তিক, এইগুলো উদ্দেশ্যমুলক আমরা বলবো। এইগুলো ঠিক না।
তিনি আরো বলেন, মূলত আওয়ামীলীগের সাথে আমাদের কোন বিরোধ ও দ্বন্দ্ব নাই। এখানকার জেলার নেতৃত্ব আওয়ামীলীগের সাথে জনসংহতি সমিতির মুখোমুখি দাড় করাতে চায়। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাথে যাতে জনসংহতি সমিতির সুসম্পর্ক না হয়, সেটাই ওরা চায়। একটি চুক্তি স্বাক্ষরকারি দল সরকারের সাথে সম্পর্ক ভালো না হলে চুক্তি কি বাস্তবায়ন হবে? হবে না। তাহলে আমরা বলবো স্থানীয় নেতৃত্বই চায় না এখানকার উন্নয়ন।
জোট বদ্ধ নির্বাচনের সম্ভাবনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন কিছুই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমরা শান্তির পক্ষে, উন্নতির পক্ষে, উন্নয়নের পক্ষে। আমরা অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল। নির্বাচনের তফসীল ঘোষনার পর সব কিছু পরিস্কার হবে।