সিএইচটি টুডে ডট কম, লংগদু (রাঙামাটি)। করোনা ভাইরাসের প্রভাবের পর থেকেই মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। উপার্জনের অভাবে নিম্নবিত্তের ঘরে খাবার নেই। এমন সংকটকালে লংগদু উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়েছে চোরের উপদ্রব। ফলে গৃহস্থরা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) দিবাগত রাতে উপজেলা সদরে এক গৃহস্থ বাড়িতে ৩টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে।
একই এলাকায় অল্প কিছুদিন আগে ৩/৪ টি ছাগল চুরির ঘটনা ঘটেছে বলেও জানা গেছে। উপজেলার মুসলিম ব্লক এলাকা থেকে কিছু দিন পূর্বে একরাতে ১৩টি মটর পাম্প চুরি হয়েছে। বিভিন্ন একালার দোকান থেকে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে মালামাল ও নগদ অর্থ, বাসা বাড়ি থেকে হাঁস-মুরগি, নারিকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও গত কয়েক দিন আগে থেকে এ ধরনের চুরি বেড়েই চলছে বলে ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় বিশ্লেষকরা জানান, সাম্প্রতিকালে করোনার প্রভাবের কারণেই উপজেলায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে শতশত মানুষ। থমকে গেছে তাদের জীবনযাত্রা। এসব মানুষের মধ্যে দরিদ্র পরিবার গুলোতে দেখা দিয়েছে খাদ্যসহ নানা ধরনের সংকট। ভুক্তভোগীরা করোনা মোকাবিলায় বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। তারমধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক দূর্যোগ। চারদিকে যেন শুরু হয়েছে হাহাকার। মানুষ খাদ্যের সন্ধানে ছুটছেন এদিকে-সেদিক। স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও তেমন কোন সুবিধা পাচ্ছেন না। যারা পাচ্ছেন তাদের সংখ্যা হাতে গোনা। তাই দিন যতই যাচ্ছে, মানুষের দুর্ভিক্ষ ততই বাড়ছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কিছু দুর্বৃত্ত মানুষ চুরির পেশায় নেমেছে।
উপজেলার কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা জানান, বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে রাত গড়িয়ে সকাল হলে খবর আসছে চুরি যাওয়ার। সংঘবদ্ধ চোরের দল দিনে-দুপুরে ও রাতের আঁধারে গৃহস্থের বাড়ির মালামাল, কৃষি ফসল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল এমন কি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিস থেকে জেনারেটর, ল্যাপটপ এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পত্রাদিও চুরি করছেন সুযোগ বুঝে। সম্প্রতি এমন অবস্থার সৃষ্টিতে গৃহস্থরা ও নৈশ প্রহরীরা চোর আতঙ্কে ঘরবাড়ি ও নিজ প্রতিষ্ঠান পাহারা দিচ্ছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যক্তি বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা করে বিভিন্ন এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন সময়ে চুরি করছে সংঘবদ্ধ চোরের দল। পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি-নেতৃবৃন্দ কঠোর ব্যবস্থা নিলে হয়তো আমরা চোরের দলের হাত থেকে আমাদের জান মাল সুরক্ষিত রাখতে পারবো।
নামপ্রকাশ না করা শর্তে একজন প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, প্রায় তিন দশক আগে দেশে দুর্ভিক্ষ ছিল। সেই সময়েও চোর-ছিনতাইকারীর প্রবণতা ছিল বেশী। সিঁধ কেটে চুরির ঘটনা ছিল অহরহ। এরপর দেশের সার্বিক পরিস্থিতি উন্নত হওয়ায় চুরির ঘটনা একেবারই কমেছিল। কিন্তু কিছুদিন ধরে করোনার প্রভাবের পর থেকে আবারও চুরির ঘটনা সবখানেই ঘটছে।
লংগদু থানা কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুল আমিন ইনফো বাংলাকে জানান, এ ধরনের ঘটনার কথা শুনেছি তবে এপর্যন্ত কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। আসলে সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমন পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণ আনতে সর্বত্র নজরদারি রাখা হচ্ছে।