প্রকাশঃ ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ০৭:৩০:১৮
| আপডেটঃ ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫ ০১:৩০:০৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। পার্বত্য জেলা বান্দরবানের গহীন অরণ্যে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের ধরতে যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে। এদিকে অভিযান পরিচালনা করা এবং পর্যটকদের ভ্রমনে নিরাপত্তার স্বার্থে বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমনে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন। যৌথবাহিনীর এই অভিযান সকলে সাধুবাদ জানালেও বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে বান্দরবানের বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা।
নিষেধাজ্ঞার কারণে মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকাল থেকে কোন পর্যটকবাহী গাড়ী চলাচল করছে না আর হোটেল মোটেল খালি করে পর্যটকরা ফিরে যাচ্ছে নিজ নিজ গন্তব্যে।
সুত্রে জানা যায়,গেল কয়েকদিন ধরেই বান্দরবানের দুর্গম উপজেলাগুলোর গহীনে লুকিয়ে থাকা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করতে চলছে যৌথবাহিনীর অভিযান। বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার বিভিন্নস্থানে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশ,র্যাব,বিজিবি ও সেনাবাহিনীর এই যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানের কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যটকদের ভ্রমনে কোন ধরণের যাতে অনাকাংঙ্খিত কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয় সেজন্য মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকাল থেকেই রুমা ও রোয়াংছড়ি এই দুই উপজেলায় সকল ধরণের পর্যটকদের ভ্রমনে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়।
এদিকে পর্যটকদের জন্য অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা প্রদানের ফলে পর্যটকবাহী সকল যানবাহন বন্ধ করে দেয় চালকরা।
বান্দরবান জেলা সদরের পর্যটকবাহী যান চালক মো.ফারুক বলেন,সকাল থেকেই পর্যটকবাহী সকল যানবাহন বন্ধ রয়েছে,কেউ কোথাও যেতে পারছে না। হঠাৎ করে দুই উপজেলায় পর্যটক ভ্রমনে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে জেলা প্রশাসন আর এরপরপরই পর্যটক এর সংখ্য কম।
বান্দরবান মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন এর সভাপতি মো.জাফর ইকবাল বলেন,আমাদের সমিতিতে ৪৩৫টি যানবাহন রয়েছে যেগুলো সবই পর্যটকদের বান্দরবানের প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রে ভ্রমন করতে নিয়ে যায় আর এই সমিতিতে প্রায় ৫শত চালক রয়েছে। কিন্তু পর্যটকদের ভ্রমনে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞার ফলে পর্যটক কমে গেছে এবং সকল গাড়ী বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক চালকই বেকার হয়ে স্টেশান ও বাসায় অবস্থান করছে।
প্রশাসন থেকে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা প্রদানের ফলে জেলা সদরের বেশিরভাগ হোটেল মোটেল খালী হয়ে যাচ্ছে ,পর্যটকরা ফিরে যাচ্ছে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে।
জেলা সদরের আবাসিক হোটেল হিলটন এর ম্যানেজার মো.আক্কাস বলেন, পত্রিকা, টিভিসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বান্দরবানের দুই উপজেলায় ভ্রমনে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা প্রদানের সংবাদে আমাদের
বেশিরভাগ রুম বুকিং বাতিল হয়ে গেছে এবং অনেকেই সকালে রুম খালী করে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে গেছে। এখন আমাদের পুরো হোটেল খালী।
বান্দরবানের আবাসিক হোটেল হিলভিউ এর ম্যানেজার মো.ওমর ফারুক বলেন, নিষেধাজ্ঞা এর সংবাদে আমাদের রুমগুলো খালী হয়ে যাচ্ছে,পর্যটকরা রুম ছেড়ে চলে যাচ্ছে। আমাদের ১০০টি রুমের মধ্যে মাত্র ৭টি রুমে পর্যটক রয়েছে আর বাদবাকী সবই খালী হয়ে গেছে।
এদিকে পর্যটকদের জন্য রুমা ও রোয়াংছড়ির সকল পর্যটনস্পট নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা নিশ্চিত করে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছিমন পারভীন তিবরীজি জানান,দুই উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমনে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তবে স্থানীয় জনসাধারণ স্বাভাবিক নিয়মে চলাচল করতে পারবে। জেলা প্রশাসক আরো বলেন,গহীন অরণ্যে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের ধরতে যৌথ অভিযান চলছে, অভিযান পরিচালনা করা এবং পর্যটকদের ভ্রমনে নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যটকদের ভ্রমনে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা চলছে তবে অন্যান্য ভ্রমনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকরা চাইলেই ঘুরে বেড়াতে পারবে।