পিছিয়ে পড়া সুবিধাবঞ্চিত গ্রাম কেওয়া পাড়া !

প্রকাশঃ ১৮ অগাস্ট, ২০২২ ০৯:৩১:৫৩ | আপডেটঃ ১৭ মে, ২০২৪ ১০:১৬:০৬

দিদারুল আলম রাফি, দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি)। খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙা উপজেলাধীন তবলছড়ি ইউনিয়নের পিছিয়ে পড়া সুবিধাবঞ্চিত একটি গ্রাম কেওয়া পাড়া। এই গ্রামে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ৩০ পরিবারের বসবাস। এখানকার সবগুলো পরিবার জুম চাষের সাথে সম্পৃক্ত। আধুনিক কোন সুযোগ সুবিধার বালাই নেই এই গ্রামে। 

 

কেওয়া পাড়া মাটিরাঙা উপজেলার তবলছড়ি ইউনিয়নের আওতাধীন হলেও খাগড়াছড়ি জেলা সদর হতে যাতায়াত সুবিধা পানছড়ি উপজেলা হয়ে। মূল সড়ক থেকে পাড়াটির দূরুত্ত্ব প্রায় কিলোমিটার, যার পুরোটাই কাচা রাস্তা। একমাত্র যাতায়াত ব্যবস্থা মোটরসাইকেল হলেও বর্ষায় সেটিও চলাচল করতে পারেনা। 

 

সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের যাতায়াত সুবিধা না থাকায় মুমূর্ষু রোগীদের যথাসময়ে হাসপাতালে নেয়া যায়না। পাড়ায় একটি ইউনিসেফের পাড়াকেন্দ্র থাকলেও প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যেতে শিক্ষার্থীদের পাড়ি দিতে হয় থেকে কিলোমিটার পায়ে হাঁটা রাস্তা। এছাড়া স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন টিউবওয়েল না থাকায় ডায়রিয়া সহ নানান পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু বয়োবৃদ্ধরা। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে রয়েছে গ্রামের শতভাগ পরিবার

 

সরেজমিনে কেওয়া পাড়া গ্রামটিতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন নেই। খাবার পানি সংগ্রহ করে অনেক দূরের কুয়া থেকে। কাচা রাস্তার বেহাল অবস্থা হওয়ায় বছরের বেশিরভাগ সময় পায়ে হেঁটেই যাতায়াত করতে হয় পাড়ার লোকেদের

 

কেওয়া পাড়ার বাসিন্দা মনিন্দ্র ত্রিপুরা (৭৫) বলেন, 'পাড়ার কেউ অসুস্থ হলে কাঁধে করে ঝুলিয়ে হাসপাতালে নিতে হয়। কিছুদিন আগে আমি অসুস্থ হওয়ায় পরিবার এলাকার লোকেরা আমাকে কাঁধে ঝুলিয়ে হাসপাতালে নেওয়ার রাস্তায় নিয়ে যায়।'

 

বানু মতি ত্রিপুরা (৬৫) নামের আরেক নারী বাসিন্দা বলেন, 'খাবার পানি আনার রাস্তা অনেক দূরে। অনেক পথ হাঁটতে হয়। উঁচুনিচু পাহাড় বাইতে হয়। টিউবওয়েল না থাকায় কুয়ার পানি খেতে হয়। এর কারনে আমরা সবসময় অসুস্থ হই।'

 

কেওয়া পাড়ার কার্বারী সুমিতি রঞ্জন ত্রিপুরা জানান, 'আমাদের পাড়া থেকে স্কুল দূরে। একারণে শিশুরা পড়ালেখা করতে পারছেনা। কিছু শিক্ষার্থী পাশের গ্রামে গিয়ে অন্যের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা পড়তে পারছেনা। এছাড়া আমাদের পাড়ায় স্বাস্থ্য বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব রয়েছে।