ঘুরে আসুন বিলাইছড়ির স্বর্গপুর ঝর্ণায়

প্রকাশঃ ০৮ জুলাই, ২০২২ ০৬:৩৭:৩৬ | আপডেটঃ ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০১:১৬:২১

সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, বিলাইছড়ি (রাঙামাটি)।রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার আরো একটি মনোমুগ্ধকর ঝর্ণা হলো - স্বর্গপুর ঝর্ণা। এই ঝর্ণাটি নং বিলাইছড়ি ইউনিয়নে নং ওয়ার্ডে দীঘলছড়ি এলাকার সু- উচ্চ পাহাড়ে পাদদেশে অবস্থিত। 

 

বৌদ্ধ ধর্মের সাতটি স্বর্গের কথা বলা হয়েছে - স্বর্গগুলো হলো--বশবর্তী স্বর্গ,মহারাজিক স্বর্গ,তাবতিংস স্বর্গ,তুষিত স্বর্গ, নির্মাণরতি স্বর্গ, যাম স্বর্গ অরুপব্রহ্মা বা মনুষ্যলোক বা মনুষ্য পরিষদ স্বর্গ

 

এই সাতটি স্বর্গের নামানুসারে বিলাইছড়ি উপজেলার মনোরম স্বর্গপুরের সাতটি ঝর্ণা নামকরণ করা হয়েছে। এই ঝর্ণাগুলোর জলরাশি একীভূত হয়ে কাপ্তাই লেকের সঙ্গে মিশে গেছে। ঝর্ণা থেকে বহমান জলধারা সুর লহরিতে হৃদয়ে প্রতিটি তন্ত্রীতে জাগে নবজাগরণ শিহরণ। ক্ষণিকের হলেও মনকে টেনে নিয়ে যায় এই ঝর্ণাগুলোতে

 

দুই পাহাড়ের মধ্যে বয়ে গেছে যে স্বচ্ছ জনস্রোত, পাহাড়ে আবৃত পথে রয়েছে দীর্ঘ সচ্ছ প্রাকৃতিক সুইমিংপুল। সুইমিং পুল গুলো রয়েছে অজস্র দৃষ্টিনন্দন  স্থানীয় ভাষায় নাড়েই মাছসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ কাঁকড়া। মানুষ দেখলেই খাদ্যের আশায় এমনিতেই সামনে  চলে আসে। তবে মাছগুলো ধরা নিষিদ্ধ। অন্যদিকে ন্যাচারাল একুরিয়ামও বলা যেতে পারে

 

 

ঝর্ণাগুলো আগে কোনো সুনির্দিষ্ট নাম ছিল না,তাই সু-বিস্তিৃত এলাকাগুলো স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ঢেবা মাথা। স্থানীয় ভায়ায় ঢেবা মানে হলো পানি আর মাথা মানে উৎপত্তির মূলস্থল  বিশেষ অর্থাৎ সরু পথে পানি উৎপত্তির মূলধার (প্রথম) অংশ। অন্যভাবে বললে- মাটির নীচে জমা হওয়া পানি পাহাড়ে কোনো খাঁড়া অংশ বেড়িয়ে আসাকে বুঝিয়েছেন। তাই এলাকাটি দীঘল ছড়ি ঢেবার মাথা 'লে পরিচিত। কাপ্তাই লেকে( হ্রদে) এরকম অগণিত ঢেবার মাথা রয়েছে। তবে ভিন্ন চোখে দেখার মত নিজ চোখে না দেখলে বলতে পারবেন না

 

এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান  জানতে পেরে  বিগত  ২৩ এপ্রিল ২০২০ সনে  তিনি জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক স্থানীয় গণ্যমান্যদের নিয়ে পরিদর্শনে যান। এর পূর্বে কোন নাম ছিল না, সবাই ঢেবা মাথা নামে ডাকতো। 

 

সেখানে গিয়ে তিনি  জানতে পারেন কোন এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ঝর্ণার পাশে গভীর অরণ্যে নির্জন জায়গায় ধ্যান করতেন। সেখানে রয়েছে পাড়ার কিছু  দূরে একটি বৌদ্ধ বিহারও তাই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি শ্রদ্ধা পূণ্যস্থান। 

 

ব্যাপারটি বুঝতে  পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার  বলেন, এই বুদ্ধ বিহারের নামানুসারে - স্বর্গের মত সুন্দর এই জায়গাটি নাম হতে পারে স্বর্গপুর এবং বৌদ্ধ ধর্মের সাতটি স্বর্গের নামানুসারে ঝর্ণাগুলো নামকরণ হতে  পারে। সেই থেকে এই জায়গাটির নামকরণ করা হয়  - স্বর্গপুর। 

 

রাঙামাটি জেলা সদরে তবলছড়ি কিংবা রিজার্ভ বাজার লঞ্চ ঘাট নতুবা কাপ্তাই উপজেলার জেটি ঘাট হয়ে বিলাই ছড়ি উপজেলায় পৌঁছা যায়।সেখান থেকে ২০ -২৫ মিনিট হাটলে ধূপ্যাচর হয়ে  দীঘল পৌঁছা যায়। ৩০ মিনিটের মত বোটে তারপরে ৩০-৩৫  মিনিট মত হাটলে স্বর্গপুর ঝর্নায় পৌঁছা যায়

 

স্বর্গপুর ঝর্ণা  ছাড়াও এই উপজেলায়  রয়েছে আরও -- ধূপপানি ঝর্ণা, - কাটা ছড়া ঝর্ণা, মুপ্পোছড়া ঝর্ণা, গাছকাটা ছড়া ঝর্ণা।  এজন্য ঝর্ণার জন্য বিশেষ খ্যাত দর্শনীয় স্থান  বলা হয় বিলাইছড়ি উপজেলাকে

 

 

তাই আসুন এখুনি উপযুক্ত সময় বর্ষার মৌসুমে ঝর্ণাগুলো দেখার প্রিয়জন বন্ধুদের নিয়ে। না দেখলে মিস