বৃহস্পতিবার | ২৮ মার্চ, ২০২৪
রাঙামাটিতে সংবাদ সম্মেলন

ধর্ষণের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান মামুনকে গ্রেফতারের দাবি

প্রকাশঃ ৩০ জুনe, ২০২০ ০৮:৫৭:২৮ | আপডেটঃ ২৪ মার্চ, ২০২৪ ১২:০০:০৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটিতে ধর্ষণের বিচার চেয়ে আদালতপাড়াসহ বিভিন্ন দরবারে ধরনা দিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ভিকটিমসহ তার পরিবার। অন্যদিকে আসামি ও তার ক্যাডারদের হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, নিরাপত্তাহীন ভিকটিমের পরিবারটি। মামলার পর সপ্তাহ পার হলেও আসামি গ্রেফতারে নেই পুলিশি অগ্রগতি। ঘটনাটি জেলার বরকল উপজেলার ভুষণছড়া এলাকায়। মামলার আসামি ধর্ষক ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মামুনকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন, ভিকটিম ও তার পরিবার।

মঙ্গলবার বিকালে রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ জোরালো দাবিটি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ভিকটিম, তার বাবা মো. নাছির উদ্দিন হাওলাদার ও ফুপু সায়েরা বেগম উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারা অভিযোগ করে বলেন, বিয়ে এবং চাকরির প্রলোভনে তার বাসায় ও অফিসে ডেকে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিজ ইউনিয়নের ছোট হরিণা আমতলা গ্রামের বাসিন্দা নাছির উদ্দিন হাওলাদারের মেয়েকে (২০) দীর্ঘদিন ধরে দফায় দফায় ধর্ষণ করেন, বরকল উপজেলার ভুষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মামুন। ইউপি চেয়ারম্যান মামুন বরকল উপজেলা যুবলীগের সভাপতি। ধর্ষণের ফলে ভিকটিম বর্তমানে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু এখন সবকিছু অস্বীকার করে উল্টো ভিকটিম এবং তার পরিবারকে নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছেন মামুন চেয়ারম্যান। সর্বশেষ ২৪ জুন বাদী হয়ে বরকল থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামুনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নম্বর-০২) করেন, ধর্ষিতার বাবা মো. নাছির উদ্দিন হাওলাদার। এরপর চট্টগ্রাম পালিয়ে গেছেন আসামি মামুন চেয়ারম্যান।

মামলার বাদী মো. নাছির উদ্দিন হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, আসামি মামুন ভুষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং বরকল উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হওয়ায় তার রাজনৈতিক প্রভাবে তাকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ। অথচ প্রকাশ্য চট্টগ্রাম ঘুরে বেড়াচ্ছেন মামুন। আমি অবিলম্বে আসামিকে গ্রেফতার করে তার সুষ্ঠু বিচার ও উপযুক্ত শাস্তি চাই। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।

ভিকটিমের ফুফু সায়েরা বেগম বলেন, ভিকটিম মেয়েটির বিয়ে দিয়েছিলাম জেলার অন্য উপজেলা কাপ্তাইয়ে। পরে তাকে বিয়ে ও চাকরির প্রলোভনে স্বামীর কাছ থেকে তালাক দিয়ে ছাড়িয়ে এনে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বহুবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছেন, লম্পট চেয়ারম্যান মামুন। বর্তমানে মেয়েটি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু এখন তা অস্বীকার করে আমাদেরকে নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছেন মামুন চেয়ারম্যান ও তার লেলিয়ে দেয়া ক্যাডাররা। আমরা তার (মামুনের) উপযুক্ত শাস্তি ও সুষ্ঠু বিচার চাই।  

ভিকটিম বলেন, মামুন চেয়ারম্যান প্রথমে আমাকে তার বাসায় ডেকে নিয়ে আসে। কিন্তু সেদিন তার বাসায় অন্য কেউ ছিল না। একা পেয়ে আমাকে বিয়ে করবে বলে এবং চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আমি বাধা দিয়েছিলাম। চিৎকার করেছিলাম। কিন্তু কিছুই শোনেনি। পরে আমার স্বামীকে তালাক দিয়ে তার কাছে নিয়ে আসে। এরপর থেকে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে জোরপূর্বক দফায় দফায় ধর্ষণ করে। আমি তাকে গ্রেফতারপূর্বক তার উপযুক্ত শাস্তি চাই এবং সন্তানের স্বীকৃতিসহ আমার ও সন্তানের যাবতীয় ভরণপোষণের ব্যয়ভার তাকে নিতে হবে মর্মে দাবি করছি।   

এদিকে পুলিশ বলছে, আসামি মামুন চেয়ারম্যান এখন পলাতক। তাই এখনও গ্রেতার সম্ভব হয়নি। দ্রুত তাকে গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা।

বরকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ধর্ষণের অভিযোগ আমলে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মামুনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। আইনের ২২ ধারায় ধর্ষিতার জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। আসামি মামুন চেয়ারম্যান পলাতক। তাকে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা চলছে।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions