শুক্রবার | ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

এপ্রিলের বাড়ি ভাড়া মওকুফ করেছেন রাজস্থলীর উছাইমং মারমা

প্রকাশঃ ২৭ মার্চ, ২০২০ ০৬:৫৫:৪৫ | আপডেটঃ ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০১:২২:০১
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। করোনাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে যেখানে বাড়তি টাকা আদায় করছে সেখানে ব্যতিক্রম রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙালহালিয়া গ্রামে উছাইমং মারমা (৩৮)। আগামী  এপ্রিল মাসের টাকা নিবেন না বলে ভাড়াটিয়াদের জানিয়ে দিয়েছেন উছাইমং মারমা। উছাইমং মারমার এ কথায় চিন্তামুক্ত হয়েছেন ভাড়াটিয়ারা।

ভাড়ায় থাকা মো. ফিরোজ (৩৪) বলেন আমরা এক বছর ধরে এখানে আছি। বাড়ির মালিক খবর দিয়েছেন আগামী মাসে তিনি আমাদের কাছ থেকে ভাড়া নিবেন না। এ খবরে চিন্তামুক্ত হয়েছি আমি।  জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হতে পরামর্শ ও অন্যান্য অসুবিধা হলে তাকে জানানোর কথা বলেছেন।  আমাদের মালিক সুখে দু:খে আমাদের পাশে থাকেন।

একই কথা বলেন আরেকজন মো. কামরুল (৩৫)।  বলেন এ দুর্যোগে এক মাসের বাড়ি ভাড়া মওকুফ করা আমরা যারা ভাড়ায় থাকি তা আমাদের জন্য বড় কিছু। বাড়ি মালিকের এমন সিদ্ধান্তে আমরা সবাই খুশি হয়েছি। কারণ এ কদিন আমাদের মনে টেনশন কাজ করছে। বিভিন্ন সময় বাড়ির মালিক আমাদের কাপড় সহ নানান জিনিস উপহার দেন।

উছাইমং মারমার ছোট ভাই সিংহাইনমং মারমা বাড়িটি দেখাশুনা করেন। তিনি বলেন, দাদা আমার কাছ থেকে কোন টাকা নেন না। খবর দিয়েছেন এপ্রিল মাসের ভাড়াটি যেন ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে আদায় না করি। আমি সবাইকে বলে দিয়েছি। তিনি বলেন, স্ত্রী আর দু সন্তান নিয়ে দাদা ঢাকায় থাকেন। বছরের বিভিন্ন সময়  বাঙালহালিয়ায় এসে বিনামূল্য চিকিৎসা ক্যাম্প, কম্বল বিতরণের কাজ করেন।

উছাইমং মারমা বলেন, সারা বিশ্বে করোনা মহামারি রুপ নিয়েছে। দেশে এ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আমার বাড়িতে ৫ পরিবার ভাড়ায় থাকে। প্রত্যক মাসে আমার বাড়ি ভাড়া আসে ২০ হাজার টাকা। আগামী মাসের ভাড়া নিব না তা জানিয়ে দিতে ছোট ভাইকে বলেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে মে মাসের বিষয়টিও মাথায় রেখেছি।

উছাইমং বলেন, আমি তো ঘরের মালিক তাই ভাড়াটিয়াদের সুখ দু:খ আমাদের বুঝতে হবে। এ দুর্যোগে তাদের মানবিক আশ্রয় দিলাম ধরে নিয়ে আমি আগামী মাসের ভাড়া নিব না। এ দু:সময়ে তাদের পাশে থাকতে না পারলে যেন জীবনটা বৃথা মনে করি আমি। এ দুর্যোগে আমাদের সবাইকে সহযোগীতার মনোভাব তৈরি করতে হবে। সমাজে অনেক বিত্তবান রয়েছে তারা যদি স্ব স্ব অবস্থানে থেকে এগিয়ে আসে তাহলে এ করোনা পরিস্থিতি আমরা সহজে মোকাবেলা করতে পারব।

উছাইমং বলেন, দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে ঢাকায় একটি বায়িংহাউজে কাজ করি। যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন ভাল কাজ করে যাব। আমার জন্য দোয়া করবেন। উছাইমং মারমার এ উদ্যোগ রাঙামাটি জেলা শহরেও দেখা যায়নি।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions