শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪

“জেলা পরিষদের নিয়োগে কোটা সংরক্ষণ না করার অভিযোগ প্রতিবন্ধীদের”

প্রকাশঃ ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ০৬:০৩:১৬ | আপডেটঃ ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০৪:৩৬:০২
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়োগে কোন ধরনের কোটা সংরক্ষণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে প্রতিবন্ধী পরিবারগুলো। তারা বলছে সরকারের প্রজ্ঞাপন ও নিয়ম নীতি  অমান্য করে প্রতিটি নিয়োগ পক্রিয়া সম্পন্ন করে আসছে জেলা পরিষদ।

সরকারি প্রজ্ঞাপনে বলা আছে যে কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা,এতিম ,পোষ্য. প্রতিবন্ধী ও আনসার ভিডিপি কোটায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও এসব কোটার কোনটাই সংরক্ষণ করছে না পার্বত্য রাঙামাটি জেলা পরিষদ।

প্রতিবন্ধী খুরশীদা আক্তার অশ্রু ভরা জল চোখে নিয়ে বলেন,তার জন্ম একেবারে গরিবের সংসারে। অনেক কষ্ট বুকে নিয়ে এবং মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে হাটি হাটি পা পা সকলের সহযোগিতায় বিএ পাশ করেছি। আমি এসএসসি পাশ করার পর হতে প্রতিবন্ধী কোটায় জেলা পরিষদে অনৈকবার চাকুরর জন্য আবেদন করলেও চাকরি হয়নি, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ইং সমাজসেবা বিভাগে অফিস সহায়ক পদে আমি পরীক্ষা দেব। আমার রোল নং(বাঘাই)-৩৫৬। জানি না এবার আমার ভাগ্যে কি আছে। সরকারের কাছে আমার প্রশ্ন প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও আমাকে কেন ওই কোটায় চাকরি দেওয়া হচ্ছে না? তাহলে প্রতিবন্ধী হওয়াটা কি আমার অপরাধ? জেলা পরিষদ দলীয় কোটা ছাড়া অন্য কোন কোটা পূরণ করছে না। এধরনের অভিযোগ অনেকেরই।

প্রতিবন্ধী রনেল চাকমা বলেন,তার একটি হাতের কব্জি নাই।  প্রতিবন্ধী স্কুলের ছাত্র ও প্রতিবন্ধী স্কুলের পিয়ন ছিলাম। পড়ালেখার পাশা-পাশি আইসক্রীম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতাম। আমি জেলা পরিষদে চাকরির জন্য আবেদন করি। আমাকে চাকরি দেবে বলে কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা কথা রাখেননি। আমার চাকরিটা টাকার বিনিময়ে অন্য কাউকে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক নিয়োগে প্রতিবন্ধীরা বঞ্চিত হচ্ছে।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা মুঠো ফোনে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, জেলা পরিষদের প্রত্যেকটি নিয়োগে প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। তবে লিখিত পরীক্ষায় পাশ করলে আমরা প্রতিবন্ধীদের চাকরি দিয়ে থাকি।

প্রতিবন্ধী স্কুলের পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার বলেন,রনেল চাকমা একজন সত্যিকারের প্রতিবন্ধী সে আমার স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং আমার এই স্কুলে চাকরি করেছিলেন। রনেল চাকমা জেলা পরিষদে চাকরির জন্য আবেদন করে। জানতাম পরিষদ তাকে একটি চাকরি দিয়েছিল। পরে শুনলাম টাকার বিনিময়ে অন্যজনকে চাকরিটা দেওয়া হয়েছে। শুনে অবাক হলাম যে, প্রতিবন্ধী রনেলের চাকরি হয়নি।

প্রবীণ সাংবাদিক ও স্থানীয় দৈনিক গিরিদর্পন পত্রিকার সম্পাদক একেএম মাকছুদ আহম্মদ বলেন, সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্য চাকরির কোটা রেখেছেন কিন্তু এসব কোটা যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। বিশেষ করে জেলা পরিষদ এসব কোটা মেনে নিয়োগ দিচ্ছে না এমন অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। তবে আমার দাবি আগামীতে সকল নিয়োগে প্রতিবন্ধী কোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও আনসার ভিডিপি কোটা যেন পূরণ করা হয়।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions