বৃহস্পতিবার | ২৮ মার্চ, ২০২৪
শীর্ষ মাদক নিয়ন্ত্রণকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে

রাঙামাটিতে মাদকবিরোধী অভিযানে আটক ৭

প্রকাশঃ ২৩ মে, ২০১৮ ০৩:৩৯:২৮ | আপডেটঃ ২৪ মার্চ, ২০২৪ ০৯:১৭:৪৭
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। শহরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে অভিযানে তেমন অগ্রগতি নেই। শহর এলাকায় সর্বশেষ মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৭ জনকে আটক করা হলেও গডফাদারখ্যাত মাদক নিয়ন্ত্রণকারী ব্যবসায়ী ও অপরাধীরা এখনও অধরা।
 আটকদের মধ্যে শহরের রিজার্ভ বাজারে নাপ্পিঘাটার নিবাসী চান মিয়ার ছেলে জাহিদুর রহমান (২৯) ও পৌর কলোনির নিবাসী পরিমল দাশের ছেলে বিজয় দাশকে (২৩) মঙ্গলবার রাতে এবং ঝগড়াবিল এলাকার সিবাম চন্দ্র সাহা (৭১) ও কালো চোগা তঞ্চঙ্গ্যার ছেলে বড় পেদা তঞ্চঙ্গ্যাকে (৩৯) সোমবার রাতে আটক করা হয়েছে। এর আগে আটক  হয়, রিজার্ভ বাজারের মহসিন কলোনির নিবাসী কবির আহম্মদের ছেলে সাজ্জআদ হোসেন (২৫), পাবলিক হেলথ এলাকার নিবাসী আবদুর রশিদের ছেলে রুহুল আমিন (৩২) ও বনরূপা এলাকার বিএম মার্কেটের পেছন এলাকা হতে আবু তাহেরের ছেলে মাকসুদুর রহমান মোস্তফাকে (৩২)। রাঙামাটি কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মুন্সি আসাদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আটকরা বর্তমানে জেলা কারাগারে অন্তরীণ। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমাণে ইয়াবা ও মদ উদ্ধার করা হয়েছে। এরা সবাই মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ছয়টি মামলা হয়েছে।  

এদিকে সারা দেশের অংশে মাদকবিরোধী অভিযান চালানো হলেও রাঙামাটির শীর্ষ মাদক অপরাধীরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। অভিযোগ রয়েছে মাদক ব্যবসার সাথে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতা জড়িত রয়েছে।  পুলিশ বলছে, অভিযান জোরদার রয়েছে। অপরাধীদের ধরতে ব্যাপক তল্লাশি চলছে।

রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সত্যজিৎ বড়–য়া বলেন, অভিযানে এরই মধ্যে বিভিন্ন পরিমাণ মাদকসহ কয়েক জনকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তালিকাভূক্ত মাদক অপরাধীদের ধরতে ব্যাপক পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। অভিযানের স্বার্থে তালিকাভূক্ত অপরাধীদের নাম প্রকাশ করা যাবে না। না প্রকাশ করা হলে অপরাধীরা পালাতে পারে।

জানা গেছে, সারা দেশের মতো পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতেও ভয়াবহ আকারে ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা, মদসহ ব্যাপক মাদকদ্রব্য ছড়িয়ে পড়েছে। এসব মাদক প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাচার হয়ে ঢুকছে রাঙামাটিতে। এছাড়া রাঙামাটিসহ পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন স্থানে চাষ হচ্ছে নিষিদ্ধ পপি ও গাঁজা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত অভিযানে বিপুল পপি ও গাঁজা ক্ষেত ধ্বংস করে দিয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী। প্রায় সময় ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা ও মদসহ বিপুল মাদ্রকদ্রব্য উদ্ধার এবং অনেক অপরাধীকে আটক করা হয়। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই বিভিন্ন ফাঁক-ফোকরে জামিনে বের হয়ে যায় অপরাধীরা।

সূত্র জানায়, রাঙামাটিতে একাধিক প্রভাবশালী মাদক নিয়ন্ত্রণকারী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট রয়েছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে পাচার হয়ে আসা বিপুল মাদকদ্রব্য বিক্রি হচ্ছে রাঙামাটি জেলায়। বর্তমানে যা একেবারে সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযানের অংশে জেলাভিত্তিক ‘টার্গেট টপ টেন’ তালিকায় রাঙামাটির ১০ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর নাম অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। যাদের শীর্ষে রয়েছে শহরের বনরূপার কামিলাছড়ি স্কুল সংলগ্ন ফরেষ্ট কলোনির মাদক সম্রাজ্ঞী মাঞ্জুয়ারা বেগম ও তার স্বামী আবদুল আজিজ, কাঠালতলীর সুমন, কলেজগেট এলাকার আবদুর রশিদ সওদাগরের ছেলে মো. শফির নাম। এর আগে বহুবার তাদেরকে আটক করা হয়েছিল।
একাধিক সূত্রের তথ্য মতে, এর বাইরেও গডফাদারখ্যাত মাদক পাচার ও নিয়ন্ত্রণকারী প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত। কিছু শীর্ষ অপরাধীকে আটক করে জ্ঞিাসাবাদ করলে  প্রভাবশালীদের নাম উঠে আসবে।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions