শনিবার | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

কাপ্তাইয়ে সড়ক বিভাগের অবহেলায় দূর্ভোগে হাজারো মানুষ

প্রকাশঃ ২০ জুনe, ২০১৯ ১২:৫১:২৬ | আপডেটঃ ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০৩:৫১:১৩
সিএইচটি টুডে ডট কম, কাপ্তাই (রাঙামাটি)। কাপ্তাইয়ের শীলছড়ির সীঁতার ঘাট এলাকার কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে প্রতি বছর বর্ষায় পানি ও হাটু পরিমাণ মাটি জমে দূর্ভোগে পড়ে হাজারো মানুষ। বেকায়দায় পড়তে হয় শিক্ষার্থী, রোগী, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা সহ হাজার হাজার শ্রেণী পেশার মানুষকে। কিন্তু দূর্ভোগ লাঘবে গত এক যুগ ধরেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ দৃষ্টি-গোচর না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগীরা। সড়কটির পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলেও করা হয়না পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন। ফলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ড্রেনের উপর মাটি ভরাট হয়ে সমান হয়ে যাওয়ায় হালকা বৃষ্টিতেই পাহাড় ধ্বসে সরাসরি মাটি নেমে আসে সড়কে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে হালকা বৃষ্টিতেই কাপ্তাইয়ের শীলছড়ির  সীঁতার ঘাট এলাকার কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে পাহাড় থেকে মাটি পরে হাটু পরিমাণ মাটি জমে যায়। ফলে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্ধশতাধিক পরিবহন আটকে দূর্ভোগে পড়তে দেখা যায়, দুরপাল্লার যাত্রী, স্কুল-কলেজ পড়–য়া কোমলমতি শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কাপ্তাইয়ে ঘুরতে আসা পর্যটকবাহী কয়েকটি বাস সহ হাজার খানেক নারী পুরুষকে। এদিকে দুই ঘন্টার ব্যবধানেও কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের মাটি অপসারণে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের কেউ এগিয়ে না আসায় চট্টগ্রাম থেকে কাপ্তাইয়ে বনভোজনে আসা একটি বাসের শ’খানেক যুবক হতাশ হয়ে নিজেদের হাত দিয়েই মাটি অপসারণ করে নিজেদের পরিবহনকে ঘটনাস্থল হতে উদ্ধার করতে দেখা যায়।

এই বিষয়ে ঘটনাস্থল হতে মুঠো ফোনে সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রামের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শম্ভু সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অবগত হয়েছেন বলে জানান। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় দেরী হচ্ছে জানিয়ে বলেন,  শুক্রবার সকালে সড়ক থেকে মাটি অপসারণ করা হবে। এদিকে আগামীকাল যদি মাটি অপসারণ করা হয় তাহলে আজ ঘটনাস্থলের দু’পাশে যে ৪’শতাধিকের উপর গাড়ি আটকে পড়ে দূর্ভোগে পড়েছে হাজার খানেক যাত্রী তারা কি করবে এমন প্রশ্ন করায় তিনি বলেন, ওনারা কষ্ট করে আজ ধর্য্য ধরতে হবে।

এদিকে ঘটনার প্রায় দুই ঘন্টা অতিক্রম হওয়ার পর সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাপ্তাই প্রতিনিধি মো. কামাল হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তার কাছে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, তাদের পর্যাপ্ত লোকবলের সংকটের কথা। তবে শীঘ্রই এই সমস্যা সমাধানে স্থায়ী কোন পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহমেদ রাসেল জানান, আমি স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহাবুব আলমের মাধ্যমে আপাদত স্থানীয় কিছু শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করে দিবো। পরবর্তীতে বিষয়টির স্থায়ী ব্যবস্থাকল্পে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট লিখবো।

ওয়া¹া ইউপি সদস্য মো. মাহাবুব আলম জানান, দীর্ঘ এক যুগ ধরেই এই এই সমস্যা চলমান রয়েছে। কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালু থাকলেও চোঁখে পড়ে না সড়ক বিভাগের ড্রেনগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার কার্যক্রম। ফলে প্রতি বর্ষায় এভাবেই সড়কে মাটি জমে অসহনীয় দূর্ভোগে স্থানীয়রা। কিন্তু এর স্থায়ী সমাধান করা অতিব জরুরী।

দূর্ভোগে পড়া স্থানীয় যুবলীগ নেতা মো. সৈকত, চট্টগ্রাম মূখী যাত্রী তৈফিকুল আলম নূর ভুট্টো, বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী রোকেয়া জাহান সহ আরও অনেকেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তারা যদি সড়ককে জনগণনের চলাচলের উপযোগী করে তোলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাই গ্রহণ করতে না পারে তাহলে তাদের এত হাজার হাজার টাকা বেতন ভাতা দিয়ে পোষে রাখা অর্থহীন। আমরা এর সঠিক জবাব চাই। প্রতিবছর এভাবে আর কাদামাখা শরীর নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে চাইনা।

সড়ক বিভাগের অনুপস্থিতিতে দূর্ভোগে পড়ে সড়কে জমে থাকা মাটি হাত দিয়ে অপসারণ করা অনেকের মধ্যে মো. আনিছুল হক নামক এক যুবকের কাছে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সে ক্ষোভে ফুঁসে উঠে এই প্রতিনিধিকে বলেন, সরকার যেখানে উন্নয়নের জন্য হাজার কোটি টাকা খরচ করছে সেখানে আমরা এখানে ঘুরতে এসে হঠাৎ করে এত কষ্টে পড়ে গেলাম কেন। এসব মাটি অপসারণ করা কি সড়ক বিভাগের কাজ নয়? যদি তাদের কাজই হবে তাহলে গত ২ঘন্টা যাবত তারা কোথায়? কেন আমাদের সকলকে নিজের হাতে মাটি সড়িয়ে গাড়ি নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হলো?

এদিকে পরবর্তীতে কাপ্তাই ইউএনও এর নির্দেশে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মাহাবুব আলমের তত্বাবধানে কয়েকজন শ্রমিককে নিয়ে সড়ক থেকে মাটি সরাতে দেখা যায়।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions