শনিবার | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

২১ বছরেও চুক্তি বাস্তবায়ন করেনি, জনসংহতি সমিতিকে ধব্বংসের পায়তারা করছে সরকার : সন্তু লারমা

প্রকাশঃ ১০ নভেম্বর, ২০১৮ ০১:৪৩:৩২ | আপডেটঃ ১২ এপ্রিল, ২০২৪ ১১:৪৫:১২
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধি প্রিয় ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, পার্বত্য এলাকার শান্তি সম্প্রীতি ও উন্নয়নের জন্য জনসংহতি সমিতি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি করেছে, শান্তি চুক্তির ২১ বছর অতিবাহিত হতে চললেও চুক্তি বাস্তবায়ন করেনি।
আমরা চুক্তি বাস্তবায়নকারী সরকারের কাছে এখন উল্টো শুনতে পাই পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে, সন্ত্রাস, চাদাবাজি বন্ধ করতে হবে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এগুলো প্রশ্রয় কারা দিচ্ছে? পার্বত্য অঞ্চলে যারা শাসন করছে, নিয়ন্ত্রন করছে তারাই এগুলো প্রশ্রয় দিচ্ছে। চুক্তির সময় জেএসএস ভেঙ্গে ইউপিডিএফ করা হয়, এখন আবার জেএসএস এমএন লারমা এবং ইউপিডিএফ গনতান্ত্রিক নামে সংগঠন হয়, এগুলো ক্ষমতাসীন দলের ছত্র ছায়ায় হয়েছে, এরা পাহাড়ে সন্ত্রাস ও কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজি করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। ক্ষমতাসীন দল জনসংহতি সমিতির দিকে তীর নিক্ষেপ করতে চায়, কিন্তু জনসংহতি সমিতি সে দায় নিতে পারে না, কারন জনসংহতি সমিতি গনতান্ত্রিক, অসম্প্রদায়িকতাবাদের রাজনীতি করে।  

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মানবেন্দ্র নারায়ন লারমার ৩৫তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেএসএস রাঙামাটি জেলা শাখার সহ সভাপতি কিশোর কুমার চাকমার সভাপতিত্বে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার, পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য ও জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি গৌতম কুমার চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, শিক্ষাবিদ মংসানু চৌধুরী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, জেলা যুব সমিতির সাধারণ সম্পাদক অরুণ ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা কমিটির সভাপতি রিনা চাকমা প্রমূখ।

সন্তু লারমা আরো বলেন, জনসংহতি সমিতিকে ধব্বংস করার জন্য সরকার উঠে পড়ে লেগেছে, নিরাহী কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা জুম্ম জনগন অধিকার চাই, মুক্তি চাই এবং বাঁচতে চাই। তিনি আরো বলেন, পাহাড়ে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য ক্ষমতাসীনরাই দায়ী।
সন্তু লারমা বলেন, এমএন লারমা ছিলেন সৎ ও ন্যায় নীতির আদর্শের অধিকারী। তিনি ছিলেন দয়ালু এবং ক্ষমাশীল। ষড়যন্ত্রকারী শত্রুদের ক্ষমা করায় তাদের হাতে জীবন দিতে হয়েছিল এমএন লারমাকে। সেই হত্যাকান্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত। হত্যান্ডের পেছনে ছিল শাসকগোষ্ঠী এবং দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহলের ষড়যন্ত্র।
সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেন, মহান নেতা এমএন লারমাকে দেশী-বিদেশীদের ষড়যন্ত্রে  হত্যা করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, সরকার নানা অজুহাত দেখিয়ে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে গড়িমসি করে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে পার্বত্য চুক্তির মৌলিক ধারাগুলো বাস্তবায়নে সরকারকে এগিয়ে আসার আহবান জানান এমপি ঊষাতন তালুকদার।

এর আগে সকাল প্রভাত ফেরী ও এমএন লারমার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করা হয়, এমএন লারমা স্মরণে সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও ফানুস উত্তোলণ করা হয়।
প্রসঙ্গত: সাবেক সংসদ সদস্য ও জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা এমএন লারমা আট সহযোগীসহ ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর দলের বিভেদপন্থী প্রীতি গ্রুপের হাতে নির্মমভাবে খুন হন।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions